Saturday, July 26, 2014

শিশুদের যক্ষ্মা-যা জানা জুরুরী (পর্ব-২)

শিশুদের ফুসফুস ছাড়া অন্যান্য স্থানের যক্ষ্মার লক্ষণ
পেটের ভিতর চাকা/ পিন্ড অনুভূত
হওয়া বা পেট ফুলে যাওয়া
যক্ষ্মা রোগী সনাক্তকরণের ধাপ সমূহ
১) রোগের ইতিহাস খুব ভালভাবে জানা-
লক্ষণ
ঝুঁকিপূর্ণ শিশু
২) বিসত্মারিত শারীরিক পরীক্ষা (ওজন সহ)
৩) ল্যাবরেটরী পরীক্ষা-&মটি, এক্স-রে, কফ, ও অন্যান্য
এমটি পরীক্ষার ফলাফল-
আড়াআড়ি ভাবে ১০ মিঃ মিঃ বা তারও বেশী ফুলে যাওয়া যক্ষ্মার লÿণ (অপুষ্টির শিকার শিশুদের ÿÿত্রে
৫ মিঃ মিঃ বা তারও বেশী ফুলে যাওয়া যক্ষ্মার লক্ষণ)
এই ধরণের শিশু রোগীর কথা জানতে পারলে কি করবেন/ কোথায় যাবেন?
নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স/
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অথবা নির্ধারিত ক্লিনিকে অতিসত্বর নিয়ে যাবেন
যক্ষ্মার সন্দেহ হলে যেখানে যোগাযোগ করবেন-
• সালভেশন আর্মি, মিরপুর
• সূর্যের হাসি ক্লিনিক (PSTC, CWFD) মিরপুর বাউনিয়াবাধ
• উপজেলা স্বাস্থ্য করপেস্নক্স (ডেমিয়েন ফাউন্ডেশান, বাশাইল উপজেলা, ব্র্যাকঃ কালাই উপজেলা)
• এছাড়াও অন্যান্য নির্ধারিত ক্লিনিক/হাসপাতাল
শিশুদের যক্ষ্মা রোগের ওষুধ
• শিশুদের জন্য আলাদা ট্যাবলেট আছে যা পানিতে দিলে সম্পূর্ণ গুলে যায়। ফলে ছোট শিশুদের খাওয়াতে সুবিধা হয়
• একটি ট্যাবলেটে রিফামপিসিন, আইসোনিয়াযাইড ও পাইরাজিনামাইডের সংমিশ্রণ (3FDC) অথবা রিফামপিসিন ও আইসোনিয়াযাইডের সংমিশ্রণ (2FDC) থাকে। ÿÿত্র বিশেষে ব্যবহারের জন্য ইথামবিউটল সহ ট্যাবলেটও পাওয়া যায়।
• ট্যাবলেটের সংখ্যা কম হওয়ায় রোগীদের জন্য খেতে সুবিধা
• প্রেসক্রিপশানে ভুল হবার সম্ভাবনা কম
• DOTS কার্যক্রম চালানো সহজ হয়
ওষুধের মেয়াদ
• ইনটেনসিভ ফেজ (২ মাস)
- এই সময়ে ওষুধ দ্রম্নত জীবাণু ধ্বংশ করে যেন অন্যকে রোগ ছড়াতে না পারে। সাধারণত ২ সপ্তাহের ওষুধ সেবন করলে রোগ ছড়ানো বন্ধ হয়
• কনটিনিউএশন ফেজ (৪-৭ মাস)
- কিছু কিছু জীবাণু কোষের ভেতরে লুকিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। এদেরকে ধ্বংস করার জন্যই দীর্ঘ ৪ থেকে ৭ মাস ওষুধ সেবন করা প্রয়োজন
যদি ওষুধ পুরাপুরি ভাবে নিয়মিত খাওয়ানো না হয় তবে
• অসুখ ভালো হবে না
• পরবর্তী এই ওষুধ কাজ করবেনা
• লক্ষণ প্রাথমিকভাবে কমে গেলেও শিশু নতুন করে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে
• নতুন ধরণের ওষুধ ব্যবহার করতে হবে যার পার্শ্বে প্রতিক্রিয়া বেশী এবং অসম্ভব ব্যয়বহুল
• ইঞ্জেকশান ব্যবহার করতে হতে পারে যা কষ্টকর
• এরকম শিশু থেকে অন্য কারো যক্ষ্মা হলে পড়ে তার চিকিৎসার জন্য ও এই ধরণের নতুন, ব্যয়বহুল এবং কষ্টকর ওষুধ ব্যবহার করতে হবে
যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে সাধারণ করণীয়
• বাড়িতে বা বাড়ির আশেপাশের কারো যক্ষ্মা থাকলে শিশুদেরও যক্ষ্মা রোগ আছে কিনা তা অবশ্যই পরীÿা করতে হবে
• হাঁচি-কাশির সময় নাক মুখ ঢেকে রাখা
• সাবান দিয়ে হাত ধোয়া
• শিশুকে আলো বাতাস যুক্ত পরিবেশে রাখা
• জন্মের পরপরই শিশুদের বিসিজি টীকা দেয়া
• যক্ষ্মা রোগী সনাক্তকরণের পর দ্রম্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা
হাঁচি দেয়ার সময় কি করছে?
নিজেদের জানতে হবে

Friday, July 25, 2014

শিশুদের যক্ষ্মা-যা জানা জুরুরী (পর্ব-১)

শিশুর যক্ষ্মা ‘যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব’-যক্ষ্মা সম্পর্কে এ কথাটি আমাদের সবার জানা থাকা দরকার।
  • যক্ষ্মা বা টিবি বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান জনস্বাস্থ্য সমস্যা যা এক ধরণের জীবানু দ্বারা সংঘটিত হয়
  • দারিদ্র্য, অপুষ্টি, অপ্রতুল আলো বাতাস এবং ঘনবসতিপূর্ন নোংরা পরিবেশ এই রোগ বিসত্মারের জন্য সহায়ক
  • আমাদের দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী কোন না কোন প্রকার অপুষ্টিতে ভুগছেন
  • সরকারি তথ্যমতে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৩ লÿ মানুষ নতুন করে যক্ষ্মায় আক্রামত্ম হচ্ছেন।
  • আমাদের দেশে যাদের যক্ষ্মা হয় তাদের অধিকাংশই ফুসফুসের যক্ষ্মায় আক্রামত্ম হয়। তবে যক্ষ্মা শরীরের অন্যান্য যে কোন স্থানেই হতে পারে
  • কোন পরিবারের বয়স্ক কোন সদসন্য যক্ষ্মায় আক্রামত্ম হলে সেই পরিবারের শিশুদেরও যক্ষ্মায় আক্রামত্ম হবার সমভাবনা প্রবল যদি কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া না হয়
  যক্ষ্মা কিভাবে ছড়ায়
ফুসফুসের যক্ষ্মায় আক্রামত্ম কোনব্যক্তির হাঁচি, কাশি, কফের মাধ্যমে

যক্ষ্মা কিভাবে ছড়ায় না
  • হাতের স্পর্শ বা কোলাকুলির মাধ্যমে
  • একই থালা বাসনে খেলে বা একই গস্নাসে পানি পান করলে
  • একই কাপড় বা বিছানা বালিশ ব্যবহার করলে
  • একই টয়লেট ব্যবহার করলে
 যক্ষ্মার জীবাণু শুধুমাত্র বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে শিশুদের যক্ষ্মা নির্ণয়ে সমস্যা
  • ছোট শিশুরা (৮ বছরের কম) পরীÿার জন্য কফ দিতে পারে না
  • কফ পরীয় জীবাণু ধরা পড়ে না
  • অপুষ্টিতে আক্রামত্ম শিশুদের ÿÿত্রে প্রচলিত ‘‘টিউবারকুলিন টেস্ট’’ এ যক্ষ্মা ধরা পড়ে না
  • শিশুদের বুকের এক্স-রে তে ফুসফুসের যক্ষ্মার ÿত চিহ্ন অস্পষ্ট হতে পারে
কাদের কাছ থেকে ছড়ায়?
  • যক্ষ্মায় আক্রামত্ম কোন ব্যক্তির (যেমন শিশুর মা, বাবা, ভাই, বোন, নিকট আত্মীয়, শিশুর পরিচর্যাকারী, প্রতিবেশী, খেলার সাথী ইত্যাদি) নিকট সংস্পর্শে থাকা কোন শিশু, এমনকি যক্ষ্মায় আক্রামত্ম শিশুরাও অন্যদের মাঝে যক্ষ্মা ছড়াতে পারে
যক্ষ্মা রোগী থেকে বাতাসে জীবাণু ছড়াচ্ছে
যেসব শিশুর ঝুঁকি বেশী
  • ৫ বছরের কম বয়সী শিশু
  • স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ÿমতা দুর্বল হয় বা কমে যায় এমন পরিস্থিতিততে যেমনঃ
-         মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রামত্ম শিশু
-         গত ৩ মাসের মধ্যে যে শিশুর হাম হয়েছে
-         এইচআইভি তে আক্রামত্ম কোন শিশু
-         যে শিশু কোন কারনে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ পাচ্ছে
  • যে শিশুর বিসিজি টীকা দেয়া হয়নি বা চিহ্ন নেই (বিসিজি টীকা শুধুমাত্র টিবি মেনিনজাইটিস ও মিলিয়ারি টিবি প্রতিরোধে সহায়ক)
শিশুদের যক্ষ্মার ধরণ
  • শিশুদের ফুসফুসে যক্ষ্মা (Pulmonary TB)
  • শিশুদের ফুসফুস ছাড়া অন্য স্থানের যক্ষ্মা (Extra-pulmonary TB)
যেমন
-       গস্ন্যান্ড টিবি (TB lymphadenitis)
-         মসিত্মস্কের টিবি (TB meningitis)
-         মেরম্নদন্ডের টিবি (Spinal TB)
-         রক্তে বিসত্মৃত টিবি (Miliary TB)
-         হাড়ের/ অসিত্মসন্ধির টিবি (Bone/Joint TB)
-         টিবি ইফিউশান
  • বুকে, হৃদপিন্ডে ও পেটের আবরণীতে যক্ষ্মা সংক্রমণের কারণে তরল জমা হওয়া
শিশুদের যক্ষ্মার লÿণ
১)    এক নাগাড়ে তিন সপ্তাহের বেশী কাশি যা এন্টিবায়োটিক খাওয়ার পরও ভাল হচ্ছে না
২)    দুই সপ্তাহের বেশী জ্বর (টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া বা নিউমোনিয়া ব্যতিত)
৩)    ওজন কমে যাওয়া বা তিন মাসের বেশী সময় ধরে ওজন না বাড়া
৪)    আগের মত খেলাধুলা না করা বা ধীরে ধীরে নিসেত্মজ হয়ে পড়া
শিশুদের ফুসফুস ছাড়া অন্যান্য স্থানের যক্ষ্মার লÿণ
শিশুদের গলা বা ঘাড়ের পাশে কোন রকমব্যথাহীন গুটি হওয়া/গস্ন্যান্ড ফুলে যাওয়া- গস্ন্যান্ড টিবি
শিশুদের ফুসফুস ছাড়া অন্যান্য স্থানের যক্ষ্মার লÿণ
শিশুদের মেরম্নদন্ডের হাড়/পিঠের হাড়বেঁকে যাওয়া – পট্স ডিজিজ
শিশুদের ফুসফুস ছাড়া অন্যান্য স্থানের যক্ষ্মার লÿণ
শিশুদের শরীরের কোন অস্থিসন্ধি/(জয়েন্ট)ব্যথাহীন ভাবে ফুলে যাওয়া- জয়েন্ট টিবি